লিথোগ্রাফি

শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদ কলকাতা আর্ট স্কুলে ছয় বছরের কোর্স শেষ করেন ১৯৪২ সালে। তখন তিনি ছিলেন ফাইন আর্ট বিভাগে। এরপর ১৯৪২এর জুলাই মাসে ভর্তি হন টিচার্সশিপ কোর্সে। এ সময় তিনি বেছে নেন ছাপচিত্র বিভাগ। কিন্তু ১৯৪৩এ দুর্ভিক্ষ শুরু হলে তাঁর শিক্ষায় ছেদ ঘটে। পুনরায় তিনি ভর্তি হন ১৯৪৪ সালে। দুবছরের এই কোর্স তিনি সমাপ্ত করেন ১৯৪৬ সালে। এ পর্বে তিনি শেখেন উড এনগ্রেভিং, লিথোগ্রাফি ও ম্যুরাল পেইন্টিং। সেই সঙ্গে এচিং ও ড্রাই পয়েন্ট মাধ্যমের কাজ। আমরা তাঁর ওই সময়ে করা অন্য মাধ্যমের কাজ দেখতে পেলেও লিথোগ্রাফি বা ম্যুরাল পেইন্টিংয়ের কোনো কাজ দেখিনি। সম্প্রতি তাঁর পুরনো কাগজপত্রের মধ্য থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে লিথোগ্রাফির একটি কাজ। ‘জুতোয় কালি করা’ শিরোনামের এই ছাপচিত্রের উল্টো পিঠে ফার্স্ট ইয়ারে করার কথা উল্লেখ থাকায় ধারণা করা যায়, শিল্পকর্মটি ১৯৪৪ সালে সম্পাদিত। বাস্তবধর্মী এ কাজে জুতো পালিশকারীর অবয়ব অঙ্কনে শিল্পীর দক্ষতা প্রশংসনীয়। আলোছায়া ও পরিপ্রেক্ষিতের বোধসহ চিত্রের বাস্তবতাকে সুচারুভাবে তিনি যে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন তাতে এই মাধ্যমটির ওপর শিল্পীর যে ভালো দখল ছিল তা বোঝা যায়। তবে এ মাধ্যম নিয়ে তিনি আর এগোননি। তবু একটি নিদর্শন যে পাওয়া গেল সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

সৈয়দ আজিজুল হক, চারু ও কারু কলা ইতিহাসবিদ, অধ্যাপক বাংলা বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।